অতি শীঘ্রই কর্মজীবনে যেসব পরিবর্তন আসছে, শেষ হচ্ছে না মহামারি প্রভাব

কাজের জগতে যেসব পরিবর্তন আসছে
ফাইল ছবিঃ

অতি শীঘ্রই কর্মজীবনে যেসব পরিবর্তন আসছে, শেষ হচ্ছে না মহামারি প্রভাব।

বিশেষজ্ঞদের ধারণা  করেছিলেন, বেশ কয়েকটি কোম্পানির ইতিমধ্যে টিকা চলে এসেছে, ২০২২ সালের মধ্যে গোটা বিশ্বের সিংহভাগ মানুষকে টিকা দেওয়া গেলেও  মহামারির শেষ দেখা যাবে। কিন্তু বাস্তবতা হিসাব মিলছে না করোনাভাইরাসের নতুন নতুন ধরনের আগমনে সেই ধারণা অনেকটা ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। ফলে কর্মের জগতেও চিরস্থায়ী এক পরিবর্তন আসতে চলেছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

কিছুসংখ্যক মানুষ অগ্রিম ভবিষ্যদ্বাণী করছেন, মার্ক জাকারবার্গের তৈরি ফেইসবুক মেটাভার্সের জগতে প্রবেশ করবে কর্মজগৎ। অর্থাৎ একধরনের ভার্চ্যুয়াল বাস্তবতার জগতে প্রবেশ করবে কর্মক্ষেত্র, এই প্ল্যাটফর্ম এর মাধ্যমে চলবে সকল ধরনের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান। আবার অনেকেই বলছেন, এরপর কর্মীরা হয়তো বিটকয়েনে বেতন দাবি করবেন। কেন্দ্রীভূত প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা হয়তো থাকবে না, বরং তার বদলে বিকেন্দ্রীকৃত স্বায়ত্তশাসিত প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে উঠবে, অনেকটা মার্কিন সংবিধানের আলোকে। মার্কিন ম্যাগাজিন ফোর্বস-এর এক প্রতিবেদনে সম্প্রতি এসব তথ্য উঠে এসেছে।

নতুন বছর ২০২২ সালেই যে কর্মক্ষেত্রে এসব পরিবর্তন চলে আসবে, এসব ধারনাটা ভুল হতে পারে। করোনাভাইরাসের অমিক্রন ধরনের আগমনের কারণে এটা নিশ্চিত, আবার কবে অফিসের সব মানুষ একসঙ্গে কাজ করবেন, তার সময়-ক্ষণ নির্ধারণ করা বলা সম্ভব না।

দীর্ঘস্থায়ী পরিবর্তনের প্রথম ক্ষেত্র হচ্ছে অফিস ও সকল ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে অনিশ্চয়তা। একের পর এক ভাইরাসের নতুন ধরন আসার কারণে বিষয়টি একপ্রকার অনেকটাই নিশ্চিত। তখন হয়তো প্রতিষ্ঠানগুলোকে কিছু পরিসংখ্যানের ওপর নির্ভর করতে হবে। যেমন সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের সংক্রমণের হার কত, সংক্রমিত ব্যক্তিদের মধ্যে কতজন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ঠিক করতে হবে, অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যাবে কি যাবে না।

দ্বিতীয়ত, উচ্চ মূল্যস্ফীতি আমাদের জীবনের নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কর্মীদের আর্থিক অবস্থার অবনতির দিকে যাচ্ছে । তাই বেতন বৃদ্ধির প্রসঙ্গ জোরালো হচ্ছে, কিন্তু গুগলের মতো বৃহৎ কোম্পানি ইতিমধ্যে সকল কর্মীদের জানিয়ে দিয়েছে, উচ্চ মূল্যস্ফীতি সমন্বয় করতে তারা গণহারে সব কর্মীর বেতন বাড়াতে পারবে না। অর্থাৎ কিছু সংখ্যক কর্মীর বেতন বাড়ানো হবে। তবে সবাই আবার এক পথে হাঁটছেন, তা নয়। এক গবেষণা সংস্থা জানিয়েছে, তাদের ৪০ শতাংশ গ্রাহক কোম্পানি ইতিমধ্যে মূল্যস্ফীতি সমন্বয়ের চিন্তা করছেন। অন্যদিকে কাজের বাজারে আরও প্রতিযোগিতা আসছে বলে জানা গেছে গ্র্যান্ড থর্নটনের আরেক জরিপে। কোম্পানিটির মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান বলেছেন, এটা নিছক মূল্যস্ফীতির বিষয় নয়, মেধাবীদের কাজে নিতে একধরনের যুদ্ধ শুরু হয়েছে। ২০০৮ সালের পর বেতন বৃদ্ধির সবচেয়ে বেশি তোড়জোড় দেখা যাচ্ছে এখন। আরেক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালের শুরুতে মজুরি বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ, গত এপ্রিলে যা ছিল ৩ শতাংশ।

তৃতীয়ত, মহামারির করোনা ভাইরাস ও ওমিক্রন কারণে সর্বস্তরের কর্মীদের মধ্যে যে মানসিক জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে, তা নিরসনে অনেক কোম্পানি কর্মীদের অতিরিক্ত ছুটি দিচ্ছে। লিঙ্কডইনের মতো কোম্পানি টানা এক সপ্তাহ পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখছে। ডেলয়টের প্রধান নির্বাহী জোসেফ বলেছেন, অনেক কোম্পানি ভবিষ্যতে কর্মীদের আরও ছুটি দিতে কর্মসময়ে সমন্বয় আনবে বলে ধারণা করা যায়। সব কর্মীকে একসঙ্গে ছুটি দিচ্ছেন তাঁরা। তার কারণ হচ্ছে, সবাই একসঙ্গে ছুটি পেলে অন্তত অফিসের ই-মেইল দেখার বেদনা সহ্য করতে হয় না।

প্রতি ঘন্টার আপডেট নিউজ পেতে এখানে ক্লিক করুন